রাতের মধ্যে বারবার ঘুম ভাঙলে সেটাকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়। অনেক সময় রাতের খাবারের পর অতিরিক্ত পানি খাওয়া বা ডায়াবেটিসের কারণে মাঝরাতে প্রস্রাবের তাগিদ আসে, কিন্তু কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই প্রতিদিনই ঘুম ভাঙলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ থাকলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আমেরিকার কার্ডিয়োলজিস্ট সঞ্জয় ভোজরাজ বলেন, শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে রাতের মাঝামাঝি সময়ে বারবার ঘুম ভাঙতে পারে। সাধারণত কর্টিসল সকালে বেশি থাকে, কিন্তু যদি রাত ১–২টার দিকে কোনো কারণ ছাড়াই ঘুম ভাঙে, তা সতর্কতার লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, মানসিক চাপ ও উদ্বেগকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়।
স্বাভাবিকভাবে ঘুমের সময় দেহ ‘প্যারাসিমপ্যাথেটিক’ বা বিশ্রাম অবস্থায় থাকে। কর্টিসল বেড়ে গেলে শরীরে প্রদাহ বাড়ে, রক্তশর্করার ওঠানামা হয়, বিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং ঘুমের ছন্দ নষ্ট হয়। এসব মিলিয়ে মানসিক চাপ আরও বাড়তে পারে। তাই মাঝরাতে ঘুম ভাঙাকে সাধারণ সমস্যা ধরে অবহেলা করা উচিত নয়; প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং স্ট্রেস কমানোর উপায় অনুসরণ করুন।
দ্রুত টিপস: রাতের ঘুম ঠিক রাখার জন্য
- রাতের খাবার হালকা ও সময়মতো; ঘুমের ২–৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করুন।
- পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন; রাতে অতিরিক্ত পানি এড়ান।
- ঘুমের রুটিন ঠিক করুন; প্রতিদিন একই সময়ে শোয়া ও ওঠার চেষ্টা করুন।
- স্ক্রিন টাইম কমান; ঘুমের আগে ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার সীমিত করুন।
- স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট; শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান বা হালকা হাঁটা কাজে লাগান।
মাঝরাতে ঘুম ভাঙাকে ছোটখাটো সমস্যা ধরে অবহেলা করা ঠিক নয়। নিয়মিত ঘুম ভাঙা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সংকেত হতে পারে—বিশেষ করে স্ট্রেস বা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে। সহজ জীবনযাত্রার পরিবর্তন, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের মান দ্রুত উন্নত করা সম্ভব।