ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর এই বিভ্রান্তিকর সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে।
প্রকৃত ঘটনা কী ছিল? আইএসপিআর জানায়, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের ‘মেরিটাইম রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টার’ (এমআরসিসি) থেকে ঢাকাকে একটি জরুরি ই-মেইল বার্তা পাঠানো হয়। এতে জানানো হয়, বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় জলসীমায় ‘পারমিতা-১০’ (PAROMITA-10) নামক একটি মাছ ধরার ট্রলার ১৬ জন জেলেসহ ডুবে গেছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটির ১১ জন জেলেকে অন্য একটি ভারতীয় ট্রলার ‘রঘুপতি’ উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও ৫ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে পার্শ্ববর্তী সব জাহাজ ও ট্রলারের সহায়তা কামনা করে।
নৌবাহিনীর মানবিক তৎপরতা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ নৌবাহিনী মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে দ্রুত সাড়া দেয়। নৌবাহিনী তাদের টহলরত জাহাজকে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশ দেয়। নৌবাহিনীর জাহাজটি ভারতীয় কোস্টগার্ড এবং স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে তৎপরতা চালায়। আইএসপিআর উল্লেখ করে, এ ধরনের উদ্যোগ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ভিত্তিহীন অভিযোগ ও অপপ্রচার অথচ এই মানবিক সহায়তার ঘটনার বিপরীতে কিছু মাধ্যম প্রচার করছে যে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ওই ট্রলারটি ডুবিয়ে দিয়েছে। আইএসপিআর স্পষ্ট করেছে যে, ভারতীয় ট্রলারটি যখন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, তখন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ মাইলেরও বেশি দূরত্বে বাংলাদেশের নিজস্ব জলসীমায় অবস্থান করছিল। ফলে নৌবাহিনীর জাহাজের ধাক্কায় ট্রলারডুবির দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান বিজয় দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেছে আইএসপিআর। বিজ্ঞপ্তিতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী এমন ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সকল সংবাদমাধ্যম ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।