সন্তানকে আলাদা ঘরে শোয়ানোর ৫ কার্যকর পরামর্শ: কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

০ মতামত 62 views

শিশুকে কখন আলাদা ঘরে শোয়ানো উচিত—এ নিয়ে দেশে-বিদেশে রয়েছে নানা মত। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে শিশুকে খুব অল্প বয়স থেকেই আলাদা ঘরে ঘুমানোর অভ্যাস করানো হয়। কিন্তু বাঙালি পরিবারে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সন্তান মা-বাবার সঙ্গেই ঘুমায়। অনেক মা মনে করেন, সন্তানকে কাছছাড়া করা মানেই সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।

তবে শিশু মনোবিদ ও বিকাশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তানকে নিজস্ব ঘরে ঘুমাতে শেখানো একটি স্বাভাবিক ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া। এটি শিশুর আত্মনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস এবং ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া ৫টি পরামর্শ তুলে ধরা হলো:

১. সঠিক সময় নির্ধারণ করুন

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু যখন ৩ মাসের ঘরে পা দেয়, তখন থেকেই ধীরে ধীরে আলাদা বিছানায় ঘুমাতে শেখানো যেতে পারে—প্রথমে দোলনায়, পরে ক্রিবে বা ছোট বিছানায়। তবে একেবারে আলাদা ঘরে শোয়ানোর বিষয়টি শুরু করা যেতে পারে ১ থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যে। এ বয়সে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ এমন পর্যায়ে থাকে, যেখানে তারা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে।

২. ধীরে ধীরে অভ্যাস তৈরি করুন

আচমকা আলাদা ঘরে পাঠিয়ে দিলে শিশু ভীত বা আশ্রয়হীন অনুভব করতে পারে। তাই ধাপে ধাপে অভ্যস্ত করান। ঘুমানোর আগে তার সঙ্গে গল্প বলা, গান গাওয়া বা বিছানায় কিছু সময় কাটানো—এই অভ্যাস শিশুকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করে। এরপর ধীরে ধীরে পাশ থেকে সরে দাঁড়ান।

৩. পুরস্কার দিন, শাস্তি নয়

শিশুকে কখনো শাস্তিস্বরূপ আলাদা ঘরে শোয়ানো উচিত নয়। এতে তার মধ্যে একা ঘুমানো নিয়ে ভয় ও নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি হতে পারে। বরং একা ঘুমাতে পারলে ছোট উপহার, স্টিকার, প্রিয় খাবার—এ ধরনের পুরস্কার দিন। এতে বিষয়টি তার কাছে একটি অর্জনের মতো মনে হবে।

৪. নিরাপত্তা ও নজরদারি নিশ্চিত করুন

শিশুর ঘর যেন নিরাপদ, আরামদায়ক ও শব্দহীন হয়, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। বিছানা ও বালিশ ঠিকঠাক আছে কি না, ঘরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে কি না, এসব খেয়াল রাখুন। চাইলে বেবি মনিটর বা সিসিটিভির মাধ্যমে ঘরে না থেকেও শিশুর ওপর নজর রাখা যেতে পারে।

৫. বিশেষ পরিস্থিতিতে পাশে থাকুন

শিশু অসুস্থ থাকলে বা হঠাৎ ভয় পেলে তার ঘরে কিছু সময় কাটান। প্রয়োজনে তার বিছানার পাশে অস্থায়ীভাবে আলাদা শোবার ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে সে মানসিকভাবে সাহস পাবে এবং নিরাপত্তাবোধ করবে।

Leave a Comment