বৈষম্যহীন ও ন্যায্য নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সরকারি ১১–২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ১১–২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।
তিনি বলেন, নবম পে কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে কমিশন যেন এবার একটি বৈষম্যমুক্ত, বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য বেতন কাঠামো প্রস্তাব করে, সেটাই কর্মচারীদের প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পে স্কেলে ছিল ব্যাপক বৈষম্য। গত ১০ বছরে ১১–২০ গ্রেডের কর্মচারীরা দুটি পে স্কেল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বর্তমান বাজারদর ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়ন জরুরি। ফোরাম সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ধরে ১৩ গ্রেডের নতুন কাঠামোর প্রস্তাব করেছে।
সংগঠনের প্রস্তাব অনুযায়ী, বাড়িভাড়া ভাতা ঢাকায় মূল বেতনের ৮০ শতাংশ, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকায় ৬০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ৬ হাজার, শিক্ষা ভাতা (সন্তানপ্রতি) ৩ হাজার, যাতায়াত ভাতা ঢাকায় ৩ হাজার এবং অন্যান্য এলাকায় ২ হাজার, ইউটিলিটি ভাতা ২ হাজার, টিফিন ভাতা দৈনিক ১০০ টাকা (মাসে ২২০০), বৈশাখী ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ, ঝুঁকি ভাতা ২ হাজার এবং পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ ভাতার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এছাড়া পেনশন সুবিধা বিদ্যমান ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ এবং আনুতোষিকের হার ২৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়। পুরোনো নিয়মে তিনটি টাইমস্কেল ও দুটি সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন ও গৃহঋণ সুবিধা, ব্লক পদ বাতিল করে পদোন্নতির ব্যবস্থা, রেশন চালু এবং বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়।
সংগঠনের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান বলেন, সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নতুন পে স্কেল থেকে বঞ্চিত। এ সময়ে তাদের অন্তত দুটি পে স্কেল পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবিচারের কারণে তারা আজ দীনহীন ও ঋণগ্রস্ত জীবনযাপন করছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের চালিকাশক্তি হিসেবে তাদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈষম্যমুক্ত নবম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্যথায় কর্মচারীরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।