আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করল নতুন রাজনৈতিক মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন—এই তিন দল মিলে এই জোট গঠন করেছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। যদিও শুরুতে এই জোটে গণঅধিকার পরিষদের থাকার কথা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এতে যোগ দেয়নি।
নতুন এই জোটকে দলগুলোর পক্ষ থেকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণে আগ্রহীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ঐক্য’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর গত দেড় বছরে আমাদের অনেক জায়গায় হতাশা তৈরি হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে বিভিন্ন শক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংস্কারের বিরোধিতা করেছে এবং তা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্কারের পক্ষে আমরা তিনটি দল আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি এবং এই ঐক্য প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।’
এটি কেবল নির্বাচনী জোট নয়, বরং একটি রাজনৈতিক জোট উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করব এবং আগামীতে এক মার্কায় লড়ব। আরও বেশ কিছু রাজনৈতিক শক্তি ও দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।’
এ সময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে গায়ের জোরে কিংবা ধর্মের দোহাই দিয়ে জয়ী হবে, তবে তারা সফল হবে না।’
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, ‘দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে আমরা তিন দল এক হয়েছি। অভ্যুত্থানের পর আমাদের ও তরুণদের প্রত্যাশা অনেক ক্ষেত্রেই পূরণ হয়নি। এই অবস্থায় জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার অনুযায়ী বাংলাদেশকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিতে আজ আমরা এক নতুন যাত্রা শুরু করলাম।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আমরা তিনটি দল নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, আমরা মনে করি না যে শুধু আমরাই অভ্যুত্থান বা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করি। চব্বিশের অভ্যুত্থান টিকবে কি না, তা নির্ভর করছে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু বাস্তবায়িত হলো তার ওপর।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ তিন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।